নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাশকতার মামলায় আটক মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালামের ছেলে আবুল কাউসার আশাসহ আটকৃত ৪ জনের বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা দায়ের করেছে সদর থানা পুলিশ। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনকে ১০ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদালত রিমাণ্ড আবেদন শুনানীর জন্য ১১ জুন তারিখ ধার্য করেছে।
মামলার অপর তিন আসামী হলেন সাইফুল ইসলামের ছেলে আকাশ আহম্মেদ বাছির (২৪), মকবুল আহম্মেদের ছেলে মো. পাপ্পু আহম্মেদ (৩০), জায়েদ আলীর ছেলে মো. সোহেল (৩০)। এছাড়াও পলাতক আসামী মো. রানা (৪০), ওহিদুল ইসলাম ছক্কু (৪০), ফারুক চৌধুরী (৪৫), জিয়াউর রহমান জিয়া (৩৫), পারভেজ মল্লিক (৩৬), মাহমুদুল হাসান ওরফে লিংকন (৩১), সুমন (৩৪), আওলাদসহ (৩২) অজ্ঞাতনামা আরও ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
শনিবার (৯ জুন) শহরের দেওভোগ পাক্কার রোড থেকে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে আবুল কাউসার আশাসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায় আশা সমর্থিত নেতাকর্মীরা। এসময় রাস্তার উপর ককটেল বিস্ফোরন করে বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছে পুলিশ।
রিমান্ডের আবেদনপত্রে পুলিশ উল্লেখ করে, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এমসিসি নং- ২২৩৩/১৮, তারিখ- ০৯/০৬/১৮ এবং জিডি নং-৩২১/১৮ মূলে অত্র থানা এলাকায় অভিযান-১২ ডিউটি করা কালে বেলা আনুমানিক ১২.৪৫ ঘটিকায় থানার বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে জানতে পারি যে, ৩০/৪০ জনের একদল উচ্ছশৃঙ্খল জনতা আবুল কাউসার আশার নেতৃত্বে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে একটি মিছিল মারমুখি ভাব নিয়ে মেইন রাস্তার যানচলাচল বন্ধ করে দেওভোগ এলাকা হতে ডিপি রোড দিয়ে মন্ডলপাড়া পার্টি অফিসে যাচ্ছে। আমি উক্ত সংবাদ পেয়ে ১২.৫৫ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাধীন ৩৭৮ নং ডিপি রোডস্থ জিএন ইলেকট্রনিক্স ওয়ার্কস নামক দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছে মিছিলে বাঁধা প্রদান করলে মিছিলকারীরা উত্তেজিত হয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীসহ পলাতক আসামীগণ বেআইনী জনতাবদ্ধে পুলিশের কাজে বাঁধা প্রদান করে।
পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি মারপিট ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে দুষ্কৃতিকারীর ছোড়া ইটের আঘাতে আমি জখমপ্রাপ্ত হলে তাদের নিবৃত্ত করতে আমার সাথে থাকা কং/১৫৪৬, সাইদুর তার নামে ইস্যূকৃত সরকারি শটগান হতে এক রাউন্ড ফায়ার করে। মিছিলকারীরা পুলিশের টহল গাড়ি অটোরিকশা ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করলে আমি তাৎক্ষনিকভাবে বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে থানা এলাকায় ডিউটিরত অন্যান্য মোবাইল টিমের অফিসার ও ফোর্সদের আসতে বলি। অন্যান্য মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে আসলে তাদের সহায়তায় আমি মিছিল নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে উপরোক্ত ধৃত আসামীসহ পলাতক আসামীরা মিছিল হতে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। এসময় পালিয়ে যাবার সময় অফিসার ফোর্সদের সহায়তায় এক নং হতে চার নং আসামীদেরকে ঘটনাস্থল থেকে ধরা হয়। ঘটনাস্থল হতে পলাতক আসামী মো. রানা (৪০), ওহিদুল ইসলাম ছক্কু (৪০), ফারুক চৌধুরী (৪৫), জিয়াউর রহমান জিয়া (৩৫), পারভেজ মল্লিক (৩৬), মাহমুদুল হাসান ওরফে লিংকন (৩১), সুমন (৩৪), আওলাদসহ (৩২) অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন দ্রুত পালিয়ে যায়। আসামীরা বেআইনী জনতাবদ্ধে পুলিশের সরকারি কাজে বাঁধাদান ও পুলিশের সদস্যের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশ সদস্যদের আহত, অটোরিকশা ভাঙচুর ও রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে এজাহারনামীয় পলাতক এবং অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০জন আসামী বেআইনী জনতাবদ্ধে মার্কেটের মেইন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে রাস্তায় অটোরিকশা ভাঙচুর করে যানচলাচল বিঘœ ঘটিয়ে ক্ষতিসাধন করে।
এসময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। উপরোক্ত আসামীদের নিকট প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য মজুদ আছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল হতে অত্র মামলার বাদী সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সদের সহায়তায় উপরোক্ত আসামীদেরকে ধরেন। মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে বিস্ফোরক দ্রব্য ককটেল বোমা উদ্ধারের নিমিত্তে ও এজাহার নামীয় পলাতক আসামীদের অবস্থান ও গ্রেফতার করার লক্ষ্যে আসামীদেরকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আনিয়া মামলা সংক্রান্তে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন। তাই ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করিলাম।